আনারস(Pineapple) উষ্ণ আবহাওয়ার রসালো ফল ,যা স্বাদ ও পুষ্টির এক দুর্দান্ত সংমিশ্রণ
আনারস (Pineapple):
আনারস প্রাকৃতিক মিষ্টি ও টক স্বাদের সেরা সংমিশ্রণ- আনারস শুধু মুখরোচকই নয় বরং স্বাস্থ্যকরও।
রোদ মাখা ফল আনারস। এটি আমাদের ত্বক ও চুলের বন্ধু।
আনারস আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য সুপার ফুড।
আনারস গ্রীষ্মের একটি মিষ্টি উপহার।
আনারস বেশিরভাগ মানুষের খুব প্রিয় ফল।
ফল এর স্বাদ ও উপকারিতা দুটোই দারুন।
একটি আনারস, অনেক উপকারিতা।
এটি আপনাদের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই যোগ করবেন।
গ্রীষ্মের এই গরমে এক গ্লাস আনারসের রস শরীরকে ঠান্ডা করে।
প্রতিদিন আনারস খেলে আমাদের ত্বক ও চুল সুন্দর থাকবে।
আনারস শুধু খেতেই সুস্বাদু নয়,এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
আনারস খাওয়ার কিছু উপায়:
১) ফল:
সরাসরি কাঁটা আনারস খোসা ছাড়িয়ে ফল হিসেবে টুকরো টুকরো করে কেটে খাওয়া যায়।
২) সবজি হিসেবে:
সবজির সাথে মিশিয়ে রান্না করে খাওয়া যায়।
৩) জুস :
আনারস থেকে জুস বের করে জুস তৈরি করে খাওয়া যায়।
৪) রান্না আনারস:
বিভিন্ন রান্নার উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
৫) বেকিং:
আনারস কেক বা অন্যান্য মিষ্টি তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
আনারস দিয়ে বিভিন্ন ধরনের আচার তৈরি করা যায়।
অন্যান্য
আনারস দিয়ে স্মুদি, জ্যাম ,জেলি ইত্যাদিও তৈরি করা যায়।
আনারসের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা:
আনারস একটি ক্যালরি,ভিটামিন সি, ফাইবার,কার্বোহাইড্রেট,প্রোটিন সমৃদ্ধ ফল।
আনারসে ক্যালরি কম কিন্তু অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল।
১) আনারস কেবল পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ নয়, এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এমন অনু যা আপনার শরীরকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রচুর পরিমাণে মুক্তো রেডিক্যালের কারণে হয় ,যা অস্থির অনু বা কোষের ক্ষতি করে। আনারস বিশেষ করে ফ্লাভোনয়েডের ও ফ্যানোলিক
যৌগ নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
২) হজমের সাহায্য করতে পারে :
এই ফলের মধ্যে ব্রোমেলেন নামক এক ধরনের পাচক এনজাইম রয়েছে যা মাংসের হজম সহজ করতে পারে। আনারস ফাইবারের একটি ভালো উৎস,যা আমাদের হজমের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৩) ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে :
ক্যান্সার একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা অনিয়ন্ত্রিত কোষ বৃদ্ধি দ্বারা চিহ্নিত।
আনারস ও এর যৌগ, যার মধ্যে ব্রোমেলেন ও রয়েছে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে,অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে ও প্রদাহ কমিয়ে।
৪) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও প্রদাহ দমন করতে পারে:
আনারস বিভিন্ন ওষুধে ব্যবহার হয়ে আসছে। আনারসে বিভিন্ন ভিটামিন খনিজ ও এনজাইম রয়েছে, যেমন ব্রোমেলেন যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করতে পারে ও প্রদাহ কমাতে পারে।
৫) আর্থ্রাইটিসের লক্ষণগুলি উপশম করতে পারে:
অনেক ধরনের আর্থ্রাইটিস আছে,তবে বেশিরভাগই জয়েন্টের প্রদাহের সাথে জড়িত! ব্রোমেলাইনের প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য ব্যথা উপশম করতে পারে।
৬) অস্ত্রোপচার বা কঠোর ব্যায়ামের পরে পুনরুদ্ধারের গতি বাড়াতে পারে ;
আনারস থেকে ব্রোমেলেন গ্রহণ করলে এর ফলে যে সময় লাগে তা কমাতে পারে অস্ত্রপ্রচার বা ব্যায়াম থেকে সেরে উঠুন। যদিও এই ফলটি ব্যায়ামের পরে কার্বোহাইড্রেট ভাণ্ডার পূরণ করতে সাহায্য করে ।
স্বাস্থ্য উপকারিতা:
১) আমাদের হজম শক্তি বাড়ায়।
২) আমাদের প্রদাহ কমায়।
৩) ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য রক্ষা করে।
৪) আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে।
৫) হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখে।
বিশেষ সতর্কতা:
আনারস একটি সুস্বাদু ফল হলেও এর কিছু অপকারিতা রয়েছে। অতিরিক্ত পরিমাণে আনারস খেলে এলার্জি, হজমের সমস্যা, দাঁতের সমস্যা, রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি হতে পারে। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের আনারস খাবার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া উচিত।এছাড়াও গর্ভবতী মহিলাদের আনারস না খাওয়াই ভালো।
আনারসে থাকা ব্রোমেলিন কিছু মানুষের সমস্যা তৈরি করতে পারে। যার কারনে পেট ব্যথা ,গ্যাস, অম্বল বা অ্যাসিডিটির মতো নানারকম সমস্যা হতে পারে।
২) ডায়াবেটিস:
আনারসে প্রাকৃতিক চিনি থাকে যা ডায়বেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে । অতিরিক্ত পরিমাণে আনারস খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
৩) দাঁতে সমস্যা:
অতিরিক্ত আনারস খেলে দাঁতের এনামেল ক্ষয় হতে পারে যাদের কেভিটি বা
জিনজিভাইটিসের সমস্যা আছে ,তাদের আনারস না খাওয়াই ভালো।
৪) অ্যালার্জি:
যাদের আনারস খেলে অ্যালার্জি হতে পারে, যেমন শরীরে ফুসকুড়ি,চুলকানি বা ত্বকে লালচে ভাব দেখা দিতে পারে। তাদের আনারস না খাওয়াই ভালো।
গর্ভাবস্থায় আনারস খেলে গর্ভপাতের ঝুঁকি থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় আনারস খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
বিশেষ সতর্কতা :
যাদের অতিরিক্ত আনারস খেলে বমি বমি ভাব,মাথা ঘোরা বা শরীরে অস্বস্তি হতে পারে তাদের আনারস খাওয়ার আগে এই বিষয়গুলি বিবেচনা করা উচিত ও পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।যাদের বিশেষ কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে, তাদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আনারস খাওয়া উচিত।