
চিনির অপকারিতা
চিনি সম্পর্কে সাধারণভাবে নেতিবাচক ধারণাই প্রচলিত। অতিরিক্ত চিনি গ্রহণের ফলে স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে—এ কথা যেমন সত্যি, তেমনি এটাও সত্যি যে পরিমিত পরিমাণে চিনি শরীরের নানা উপকারে আসে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, চিনি শরীরের জন্য একটি দ্রুত শক্তির উৎস। বিশেষ করে গ্লুকোজ শরীর ও মস্তিষ্কের প্রধান জ্বালানী হিসেবে কাজ করে। ক্লান্তি বা দুর্বলতার সময় অল্প চিনি খেলে তৎক্ষণাৎ শক্তি পাওয়া যায়। অনেকসময় হাইপোগ্লাইসেমিয়ার রোগীদের ক্ষেত্রে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত স্বাভাবিক করতে চিনির প্রয়োজন হয়।
চিনির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল এটি মেজাজ ভালো করতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কে ডোপামিন ও সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে তা সাময়িকভাবে মানসিক প্রশান্তি দেয়। তবে চিকিৎসকরা এও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ করলে এই ‘ফিল গুড’ অনুভূতি আসক্তির দিকে ঠেলে দিতে পারে।
চিনি খাদ্যের স্বাদ বৃদ্ধিতে এবং রান্নার স্বাভাবিক স্বাদ বজায় রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। টমেটো সসের মতো টক খাবারে এটি স্বাদের ভারসাম্য বজায় রাখে। পাউরুটি বা কেক তৈরিতে চিনি কেবল স্বাদই নয়, টেক্সচার ও রঙেও প্রভাব ফেলে।
চিনি প্রাকৃতিক সংরক্ষণকারী হিসেবেও কাজ করে। জ্যাম, জেলি বা মিষ্টান্ন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এটি ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে দীর্ঘদিন সংরক্ষণে সহায়তা করে।
বেকারি শিল্পে ও পানীয় তৈরিতে চিনির গুরুত্ব অপরিসীম। এটি ইস্টের খাদ্য হিসেবে কাজ করে যার মাধ্যমে ফারমেন্টেশন ঘটে—ফলে রুটি, কেক ও নানা পানীয় প্রস্তুত করা সম্ভব হয়।
চিকিৎসা ও পুষ্টিবিদদের মতে, চিনি পুরোপুরি বাদ দেওয়া নয় বরং নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় গ্রহণ করাই স্বাস্থ্যকর উপায়। শরীর ও মনের সাময়িক চাহিদা মেটাতে চিনি যেমন দরকারি, তেমনি এর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

