
দৈনন্দিন জীবনের জন্য শরীরচর্চা কতটা উপকারি
শরীরচর্চা বা ব্যায়াম মানুষের সুস্থ জীবনযাপনের জন্য অপরিহার্য অভ্যাস। এটি কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্য বা শারীরিক ফিটনেস বাড়ায় না, বরং গভীরভাবে আমাদের দেহ, মন এবং সামাজিক জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
১. শারীরিক উপকারিতা:
নিয়মিত ব্যায়াম পেশি ও হাড়কে মজবুত করে।
হার্টের পাম্প করার ক্ষমতা বাড়ায়, রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে।
বিপাকক্রিয়া (Metabolism) ঠিক রাখে, ফলে অতিরিক্ত চর্বি জমে না এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
শ্বাসপ্রশ্বাসের ক্ষমতা বাড়িয়ে ফুসফুসকে সুস্থ রাখে।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো:
ব্যায়াম ইনসুলিনের কার্যকারিতা উন্নত করে, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় রাখে, ফলে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
হৃদরোগ, স্ট্রোক, উচ্চ কোলেস্টেরল ইত্যাদি জটিল রোগের সম্ভাবনা কমায়।
৩. মানসিক উপকারিতা:
ব্যায়ামের সময় শরীরে “এন্ডরফিন” হরমোন নিঃসৃত হয়, যা প্রাকৃতিকভাবে মন ভালো করে এবং স্ট্রেস কমায়।
উদ্বেগ ও হতাশা কমিয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।
মস্তিষ্কে রক্ত ও অক্সিজেনের প্রবাহ বৃদ্ধি পায়, ফলে মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি উন্নত হয়।
৪. দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব:
নিয়মিত শরীরচর্চা শক্তি ও সহনশীলতা বাড়িয়ে সারাদিনের কাজ সহজ করে।
ঘুমের মান উন্নত করে, ফলে সকালে সতেজ অনুভূতি নিয়ে দিন শুরু হয়।
শারীরিক অঙ্গভঙ্গি ও ভঙ্গি (Posture) সুন্দর রাখে।
৫. দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব:
দীর্ঘায়ু লাভে সাহায্য করে।
বার্ধক্যেও সক্রিয়, স্বনির্ভর ও সুস্থ থাকার সুযোগ বাড়ায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার শরীরচর্চা বা ৭৫ মিনিট তীব্র ব্যায়াম করা উচিত। হাঁটা, দৌড়ানো, সাইক্লিং, সাঁতার, যোগব্যায়াম বা খেলাধুলা—যেকোনো কিছু বেছে নিতে পারেন শরীরচর্চার মাধ্যম হিসেবে।

