
সান বার্ন (Sun Burn) থেকে রক্ষা পেতে কি করা উচিত
প্রত্যেকেই খোলা আকাশের নিচে সূর্যের আলোতে সময় কাটাতে ভালোবাসে। কিন্তু, সেই সূর্যের আলো আমাদের শরীর ও ত্বকের জন্য ঠিক কতখানি ক্ষতিকারক হতে পারে, সেটা অনেকের ধারণার বাইরে। প্রথমে যখন সান বার্ন (Sun Burn) হয়, তখন ত্বকে লালচে হয়ে যাওয়া, জ্বালা এবং ফোলাভাব অনুভব হয়। তবে সানবার্ন (Sun Burn) মোটেও সাময়িক সমস্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি নির্দেশ করে যে ত্বকের গভীরে থাকা কোশগুলো সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মিতে (UV rays) ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
সানবার্নের (Sun Burn) ফলে ত্বক অত্যধিক গরম হয়ে যায়। এর ফলে মাথা ঘোরানো এবং ক্লান্তি হতে পারে। যদি সানবার্ন (Sun Burn) কিছু সময়ের জন্য হয়, তাহলে সেটা খুব বিপজ্জনক নয়। কিন্তু, যখন এটি দীর্ঘমেয়াদী হয়, তখন পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে সানবার্নের (Sun Burn) ফলে ত্বকে বয়সের ছাপ দেখা দিতে পারে, ফলে চেহারা শুকিয়ে যায়, ডার্ক স্পট (Dark spot) দেখা দেয় এবং ত্বকের টানটান ভাবও কম হয়ে যায়।
প্রতিটি সান বার্ন ত্বক ক্যানসারের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়, যার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হল মেলানোমা (Melanoma), যা কখনো কখনো প্রাণঘাতী হতে পারে। ভয়ের বিষয় হল, এই ক্ষতি একদিনে ঘটে না; এটি হয় ধীরে ধীরে সময়ের সাথে। তাই সামান্য সানবার্নকেও (Sun Burn) অবহেলা করা উচিত নয়। বিশেষভাবে বাচ্চাদের মধ্যে, নিয়মিত ভাবে রোদে খেলা কিংবা ঘোরাঘুরি করলে সানবার্নের সম্ভাবনা বাড়তে পারে এবং পরবর্তীতে এটি মারাত্মক পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব আমাদের ত্বককে রোদ থেকে রক্ষা করার উপায় খুঁজে বের করা উচিত।
সানবার্ন (Sun Burn) কেবল ত্বকের উপর আক্রমণ করে না, এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকেও জটিল করে তোলে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কমে ওঠার কারণে অনেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন, যেমন জ্বর বা মাথাব্যথা।
তবে, যদি আপনি নিয়মিতভাবে ত্বকের যত্ন নিতে শুরু করেন, যেমন সানস্ক্রিন ব্যবহার করা, তাহলে ত্বক স্বাস্থ্যকর থাকবে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন লাগানো প্রয়োজন এবং প্রতি দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর পর পুনরায় লাগানো উচিত।
ত্বকের জন্য একটি নিয়মিত সময়সূচী মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাইরে থেকে ফিরে এসে মুখ ভালো করে ধোয়া এবং এরপর অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা ত্বককে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণে জল পান করা উচিত। জল কেবল ত্বককে ঠান্ডা রাখে না, বরঞ্চ এটি ত্বককে উজ্জ্বলও করে। এর ফলে সানবার্ন (Sun Burn) হলেও তার ক্ষতিকারক সম্ভাবনা কমে যায়।
সূর্যের উত্তাপ বুঝে বাড়ি থেকে বেরোনো উচিত। চেষ্টা করুন যখন সূর্যের প্রভাব বেশি থাকে তখন বাইরে না যাওয়ার, বরঞ্চ ছায়ায় থাকার বা ছাতা ব্যবহারের। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে রোদের তেজ বেশি থাকে। তাই এই সময় বাড়ির বাইরে না বেরোলেই ভালো।
যদি আপনি বাইরে যাওয়ার সময় এই নিয়মগুলো মেনে চলেন, তাহলে সানবার্নের (Sun Burn) ক্ষতি অনেকটাই কমানো সম্ভব। এর ফলে আপনার বাহ্যিক সৌন্দর্য যেমন সুরক্ষিত থাকবে, তেমনি শরীরের ভেতরের রোগ সংক্রমণ ও কম হবে এবং আপনি সুস্থ থাকবেন।

