
আলসারের নিরাময়ের উপায়
আলসার হল শরীরের অভ্যন্তরে কোনো অঙ্গের অভ্যন্তরীণ দেওয়ালে ঘা বা ক্ষতের সৃষ্টি, যা সাধারণত পাকস্থলিতে, ক্ষুদ্রান্ত্রে বা খাদ্যনালিতে হয়ে থাকে। এটি একধরনের যন্ত্রনাদায়ক এবং দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হতে পারে।
আলসার হওয়ার কারণ
১. অতিরিক্ত ক্যাফেইন, চা, কফি ও মদ্যপান করলে আলসার এর সমস্যা দেখা দেয়। এগুলো পাকস্থলীতে অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়ায়। ফলে পাকস্থলীর দেওয়াল আক্রান্ত হয়ে আলসার হতে পারে।
২. অতিরিক্ত ধূমপান ও তামাক সেবন করলে আলসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।ধূমপান পাকস্থলীর রক্ত চলাচল কমিয়ে দেয়। এটি পাকস্থলীর ঘা নিরাময় প্রক্রিয়াকে কমিয়ে দেয় এবং নতুন আলসার তৈরি করে।
৩.দীর্ঘদিন ব্যথানাশক ওষুধ খেলে আলসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আইবুপ্রোফেন, অ্যাসপিরিন, ন্যাপ্রক্সেন ইত্যাদি ওষুধের কারণে আলসার এর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।এই ওষুধগুলো পাকস্থলীর রক্ষা-করা মিউকাস স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
আলসারের নিরাময়ের উপায়
১. নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি, কারণ ভুল ওষুধে আলসার এর প্রভাব আরো খারাপ ভাবে পড়তে পারে।
২. খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন:
অতিরিক্ত মশলাদার, ঝাল, টক ও ভাজাভুজি খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। দিনে বারবার অল্প অল্প করে খাবার খান দুধ, কলা, সুজি, ওটস, নারকেল পানি সহ সহজলোভ্য খাবার খান। অ্যালকোহল, ক্যাফেইন ও সিগারেট পুরোপুরি বাদ দেওয়া আবশ্যক।
৩. ঘরোয়া প্রতিকার:
কাঁচা কলা ও মধু: কাঁচা কলার পেস্ট ও মধু মিলে পাকস্থলীর ঘা সারাতে সাহায্য করে।
৪. অতিরিক্ত মানসিক চাপ আলসার বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়াও ঘুম ঠিকমতো না হলে পাকস্থলীর অ্যাসিড ক্ষরণ বেড়ে যায়, তাই প্রতিদিন ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন।
আলসার প্রধানত হয় ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, ব্যথানাশক ওষুধ, ধূমপান ও চাপের কারণে। পেট জ্বালা ও গ্যাস হলে চিকিৎসা জরুরি। ওষুধ, সুষম খাবার ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাসে আলসার কমানো সম্ভব। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা ও সচেতনতা আলসার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

