
শরীরে ভিটামিনের (Vitamin) মাত্রা ঠিক রাখতে কি খাওয়া উচিৎ?
মানবদেহে ভিটামিনের (Vitamin) মাত্রা সঠিক পরিমাণে থাকা খুবই জরুরী। কারণ ভিটামিন (Vitamin) আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, দেহে কোষ তৈরিতে সাহায্য করে, রক্ত জমাট বাঁধা আটকায়, দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং দেহে শক্তির জোগান দেয়। ভিটামিন (Vitamin) হল আমাদের শরীরের এমন এক জৈব পদার্থ যা শরীরে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। কিন্তু মানব দেহ নিজে থেকে ভিটামিন (Vitamin) তৈরি করতে পারে না। তাই আমাদের ভিটামিনের (Vitamin) অভাব মেটাতে গেলে তা খাবারের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে।
কি কি ধরনের ভিটামিন (Vitamin) হয় এবং কোন খাবার খেলে তার অভাব মেটে?
মোট ৬ ধরনের ভিটামিন হয়। যেমন : ভিটামিন এ (Vitamin A), ভিটামিন বি কমপ্লেক্স (Vitamin B Complex), ভিটামিন সি (Vitamin C), ভিটামিন ডি (Vitamin D), ভিটামিন ই (Vitamin E) এবং ভিটামিন কে (Vitamin K)।
এই সবকটা ভিটামিনের কাজ হল :-
১. ভিটামিন এ (Vitamin A): ভিটামিন এ (Vitamin A) দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি ও বাড়ায়।
২. ভিটামিন বি কমপ্লেক্স (Vitamin B Complex): ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের (Vitamin B Complex) মধ্যে ভিটামিন B1, B2, B6, B12 এবং ফলিক অ্যাসিড রয়েছে। এই ভিটামিন (Vitamin) গুলি দেহে শক্তির উৎপাদনের সাহায্য করে এবং স্নায়ুতন্ত্র অথবা আমাদের শরীরের নার্ভগুলিকে সচল রাখতে সাহায্য করে।
৩. ভিটামিন সি (Vitamin C): ভিটামিন সি (Vitamin C) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে দেহের ইমিউনিটি বাড়ায় এবং ত্বক ও কোলাজেনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
৪. ভিটামিন ডি (Vitamin D): ভিটামিন ডি (Vitamin D) দেহে ক্যালসিয়ামের মাত্রা সঠিক রাখে এর ফলে শরীরের হাড় মজবুত হয়।
৫. ভিটামিন ই (Vitamin E): ভিটামিন ই (Vitamin E) আমাদের কোষকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এটি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
৬. ভিটামিন কে (Vitamin K): ভিটামিন কে (Vitamin K) রক্ত জমাট বাঁধা আটকায় এবং এটিও হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
কি কি খাদ্য গ্রহণ করলে আমাদের দেহে এই ভিটামিন (Vitamin) গুলি সঠিক মাত্রায় বজায় থাকবে?
১. ভিটামিন এ (Vitamin A): ভিটামিন এ (Vitamin A) -এর ক্ষেত্রে ডিম, দুধ অথবা যেকোনো দুগ্ধ জাতীয় খাবার, পালং শাক অথবা যে কোন সবুজ শাকসবজি, কুমড়ো, মিষ্টি আলু, গাজর ইত্যাদি খাওয়া খুবই প্রয়োজনীয়।
২. ভিটামিন বি কমপ্লেক্স (Vitamin B Complex): ভিটামিন বি কমপ্লেক্স (Vitamin B Complex)-এর জন্য সবুজ শাকসবজি খাওয়া উচিৎ যা দেহের ফলিক অ্যাসিডের মাত্রা সঠিক রাখবে। ডাল, ছোলা, শস্য দানা খেতে হবে। এবং বিশেষত ভিটামিন বি 12 (Vitamin B12)-এর জন্য মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
৩. ভিটামিন সি (Vitamin C): ভিটামিন সি (Vitamin C)-এর ক্ষেত্রে ব্রকলি, ক্যাপসিকাম, পেঁপে, স্ট্রবেরি, লেবু, কমলা লেবু, পেয়ারা ইত্যাদি খাওয়া উচিৎ।
৪. ভিটামিন ডি (Vitamin D): ভিটামিন ডি (Vitamin D)-এর প্রধান উৎস কোন খাবার নয় বরং এটি সকালে উঠে সূর্যের রশ্মি শোষণ করা। সকালে সূর্যের হালকা রশ্মি আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি (Vitamin D)-এর পরিমাণ বাড়ায়। রোজ ১০ থেকে ১৫ মিনিট রোদে থাকার চেষ্টা করতে হবে। তাছাড়াও খাদ্যের মধ্যে যেকোনো চর্বিযুক্ত মাছ খেতে হবে। ডিমের কুসুম এবং দুধ অথবা দই খাওয়া উচিৎ।
৫. ভিটামিন ই (Vitamin E): ভিটামিন ই (Vitamin E) -এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের বাদাম খেতে হবে। তাছাড়াও নানা ধরনের তেল যেমন – সূর্যমুখী তেল খেতে হবে।
৬. ভিটামিন কে (Vitamin K): ভিটামিন কে (Vitamin K)-এর জন্য সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। যেমন – বাঁধাকপি, ব্রকলি, নানা ধরনের সবুজ শাক ইত্যাদি।
কোন একটি ভিটামিনের (Vitamin) জন্য অতিমাত্রায় একই খাবার না খেয়ে বরং সব ধরনের খাবার খাওয়া উচিৎ যাতে আপনার দেহ সব ধরনের ভিটামিন (Vitamin) পায়। আপনি যদি কোন শারীরিক সমস্যায় ভুগেন বা আপনার যদি মনে হয় যে আপনার শরীরে যে কোন একটি ভিটামিনের (Vitamin) অভাব আছে তাহলে চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

