ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহার করা ত্বকের জন্য কতটা উপকারি?
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততার কারণে ত্বকের যত্ন নেওয়া আমাদের পক্ষে প্রায়ই অসম্ভব হয়ে পড়ে। কিন্তু রোজ ঘুম থেকে উঠে বা বাইরে থেকে ফিরে আমাদের মুখে যেই ধুলো ময়লা অথবা ক্লান্তির ছাপ পড়ে তা শুধুমাত্র একটি উপায় দূর করা যেতে পারে। তা হল নিয়মিত ফেসওয়াশ (Facewash) করা।
ফেসওয়াশ (Facewash) আমাদের ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারি। প্রতিদিনের জীবনে সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে, বাতাসে ভাসতে থাকা ধুলো-ময়লা, গাড়ির ধোঁয়া, এবং সবশেষে মেকআপ (Makeup), এত কিছুর ভার আমাদের ত্বকের ওপর পড়ে। আমরা যদি নিয়মিত ফেসওয়াশ (Facewash) না করি তাহলে এই ময়লা জমতে জমতে ত্বকের সৌন্দর্য হারায়, ত্বকে কালশিটে পড়ে যায়, এবং যা পরবর্তীকালে ঠিক করা কঠিন হয়ে পড়ে। নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার না করলে এই বাইরের দূষণের ফলে ত্বকে ব্রণ (brono), ফুসকুড়ি (Pimples), ব্ল্যাকহেডস (Blackheads) এমনকি ত্বকের উজ্জ্বলতা (Glow) হারিয়ে যায়।
ফেসওয়াস (Facewash) শুধুমাত্র আপনার ত্বককে পরিষ্কার করে না। তাছাড়া এটি ত্বকের ভেতরে লুকিয়ে থাকা তেল, মৃত কোষগুলিকে (Dead cells) সরিয়ে ফেলতেও সাহায্য করে। ত্বককে সতেজ রাখে। আপনি যদি নিয়মিত ত্বকচর্চার (Skincare) সময় ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহার না করেন তাহলে কোন সিরাম (serum) অথবা কোন ক্রীমই (moisturizer) ত্বকে কার্যকরী হবে না।
ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহার করার উপকারিতা গুলি হল :-
১. এটি ত্বককে সতেজ করে তোলে। সারাদিনে আমাদের ত্বকের উপর যা চাপ পড়ে তারপর যখন দিনশেষে ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহার করা হয় তখন তা ত্বককে পরিষ্কার করে তোলে, যার ফলে তখন ত্বক অনেক বেশি সতেজ দেখায়। মনে হয় সমস্ত ক্লান্তি এক নিমেষে দূর হয়ে গেছে। ত্বককে ফেসওয়াশ (Facewash) করার পরে খুবই প্রাণবন্ত দেখায়।
২. ফেসওয়াস (Facewash) আমাদের ত্বককে পরিষ্কার রাখে। চারপাশের বাতাসে এত ধুলো-ময়লা, দূষণ, গাড়ির ধোঁয়া, তেল ইত্যাদি থেকে আমাদের ত্বককে বাঁচায় একমাত্র ফেসওয়াশ (Facewash)। ত্বকে সারাদিনের এত ময়লার জন্য আমাদের ত্বকের পোর্সগুলি (pores) বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে সে ময়লাগুলো জমে যায়। যার ফলে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা (glow) হারিয়ে যায়, ব্রণ (brono) ও ফুসকুড়ি (pimples) হয়। কিন্তু যদি নিয়মিত ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহার করা হয় তাহলেই একমাত্র ত্বকের যাবতীয় নোংরা ময়লা ইত্যাদি সব দূর হয় এবং ত্বক আবার নিজের উজ্জ্বলতা (glow) ফিরে পায়।
৩. ত্বক চর্চার (skin care) সময় সবার আগে ফেসওয়াশ (Facewash) করা খুব প্রয়োজন। যদি ফেসওয়াশ (Facewash) না করে ত্বক চর্চা (skin care) শুরু করা হয় তাহলে কোন লাভ হবে না। ফেসওয়াশ (Facewash) আমাদের ত্বক পরিষ্কার করে যার ফলে ত্বক চর্চার (skin care) বাকি দ্রব্যগুলোর (products) কার্যকারিতা অনেকটাই বেড়ে যায়।
৪. ব্রণ (brono) দেখা দিলে তা ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে। ব্রণ (brono) সাধারণত ত্বকে থাকা অতিরিক্ত মাত্রায় তেল এবং সেই তেলে জমে থাকা ধুলো ময়লা দূষণ ইত্যাদির কারণে যে পোর্স (pores) বন্ধ হয় তার ফলে দেখা যায়। কিন্তু ফেসওয়াশ (Facewash) করলে সেই ত্বকে জমে থাকা দূষিত তেল দূর হয় এবং পোর্সগুলিও (pores) খুলতে থাকে। যার ফলে ব্রণর (brono) সম্ভাবনা কমে এবং ত্বক সুন্দর দেখায়।
৫. ফেসওয়াশ (Facewash) শুধুমাত্র বাইরের দূষণকেই ত্বক থেকে দূর করে না। বরং সারাদিনের মেকআপ (makeup), ক্রিম (cream) ইত্যাদিও পরিষ্কার করে। আপনি যদি প্রতিদিন মেকআপ (makeup) করেন তাহলে দিনশেষে সেই মেকআপটি (makeup) ফেসওয়াশ (Facewash) দিয়ে তোলা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। না হলে সেই মেকাপের (makeup) ফলে আপনার ত্বকে কালশিটে ভাব পরে, উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায়, এমনকি আপনি যদি রোজ মেকআপ (makeup) না পরিষ্কার করে ঘুমান তাহলে ত্বকের যে ক্ষতিটা হয় তা সারিয়ে ওঠা প্রচণ্ড কঠিন হয়ে পড়ে।
৬. নিয়মিত ফেসওয়াশ (Facewash) করলে ত্বকের সমস্ত মৃত কোষগুলি (dead cells) নষ্ট হয় যার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা (glow) বাড়ে। এই মৃত কোষগুলির (dead cells) জন্যই ত্বক সতেজ লাগে না এবং ত্বকের একটি ক্লান্তির ছাপ দেখা যায় যা ফেসওয়াশ (Facewash) করলে দূর হয়।
ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহারের সময় কিছু সাধারণ জিনিস খেয়াল রাখতে হবে যেগুলি হল :
প্রতিদিনে দুবার নিয়মিত ফেসওয়াশ (Facewash) করা প্রয়োজন। প্রথমবার ঘুম থেকে উঠে সকালে ভালো করে ফেসওয়াশ (Facewash) দিয়ে মুখ ধুন। এবং দ্বিতীয়ত রাতে বাড়ি ফিরে আরেকবার ফেসওয়াশ (Facewash) দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহার করা উচিৎ। সাধারণত ত্বক তিন ধরনের হয়। শুষ্ক ত্বকের (dry skin) জন্য হাইড্রেটিং (hydrating) ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহার করা প্রয়োজন, যার ফলে ত্বকে শুষ্কতা ধীরে ধীরে কমে এবং ত্বক অনেক ভালো দেখায়। তৈলাক্ত ত্বকের (oily skin) জন্য তেল নিয়ন্ত্রণ করা যায় এমন ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহার করা প্রয়োজন, এর ফলে ত্বকের তেলের পরিমাণ অনেকটাই কমে, ব্রণ (brono), ফুসকুড়ি (pimples) ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে আসে। আপনি যদি সঠিকভাবে ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহার না করেন তাহলে ত্বকের ক্ষতি ছাড়া ভালো হবে না। ফেসওয়াশ (Facewash) সব সময় হালকা ভাবে মুখে ঘষা উচিৎ। যদি বেশি জোরে ফেসওয়াশ (Facewash) ত্বকের ওপর ঘষা হয় তাহলে ত্বক জ্বালা করবে এবং কোন কোন জায়গায় লালচে ছাপ পড়ে যায়। ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহারের পরে যে কোন ক্রিম (moisturizer) ব্যবহার করা উচিৎ, যা আপনার ত্বককে শুষ্ক হওয়া থেকে আটকাবে। কারণ ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহারের পরে ত্বক একটু হলেও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে তাই তারপরেই যে কোন ক্রিম (moisturizer) ব্যবহার করা উচিৎ।
ফেসওয়াশ (Facewash) ব্যবহারের পরে আপনার ত্বক সুন্দর দেখাবে এবং আপনার সৌন্দর্য আরো অনেক মাত্রায় বেড়ে যাবে। তাই এটি আপনার দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হওয়া উচিৎ।
