প্রাকৃতিক রসালো ফল, স্বাদ গুণ ও উপকারিতায় ভরপুর এক ফল জামরুল

জামরুল (Water Apple) জলের মতো হালকা, পুষ্টিতে ভারী ফল জামরুল।

বাংলা নাম: জামরুল

ইংরেজি নাম: Water Apple

বৈজ্ঞানিক নাম: Syzygium samarangense

পরিবার: Myrtaceae

হিন্দিতে – गुलाब जामुन।

উৎপত্তিস্থল: মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া এলাকা। বর্তমানে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশে চাষ হয়।

জামরুল গাছের বিবরণ:

এটি একটি মাঝারি আকৃতির চিরহরিৎ গাছ

উচ্চতা: ১০–১৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে

পাতা: চওড়া ও লম্বাটে, সবুজ রঙের

ফুল: হালকা সবুজ-সাদা রঙের, সুগন্ধযুক্ত

ফল: ঘণ্টার মত আকৃতি, রঙ সাধারণত হালকা সবুজ, গোলাপি, লাল বা গাঢ় লাল

ভিতরের অংশ: অত্যন্ত রসালো, ফাঁপা এবং সাদা রঙের

জামরুলের পুষ্টিগুণ: (Per 100g ফল):

উপাদান পরিমাণ

ক্যালরি -25 kcal

পানি -90–93%

কার্বোহাইড্রেট- 5–6g

আঁশ-1g

ভিটামিন C-20–25mg

ভিটামিন A, B1, B2অল্প পরিমাণে

ক্যালসিয়াম -29mg

পটাশিয়াম- 123mg

জামরুল খাওয়্যর পদ্ধতি ও ব্যবহার:

১) কাঁচা ফল হিসেবে খাওয়া যায়।

২) জামরুলের সাথে সামান্য লবণ ও লঙ্কা গুড়ো মিশিয়ে খাওয়া যায়।

৩) সালাদে:

জামরুল সালাদে ব্যবহার করা যায়।

৪) জামরুল জ্যাম, জেলি, আচার তৈরি করতে সাহায্য করে।

৫) জামরুলের রস বানানো যায়।

জামরুলের উপকারিতা:

১) জামরুল হাইড্রেশন ও ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধে সহায়ক।

২) জামরুলে প্রচুর পরিমাণে জলীয় উপাদান থাকায় শরীর ঠান্ডা রাখতে ও জলশূন্যতা রোধে সাহায্য করে।

৩) জামরুল হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে:

জামরুল কম ক্যালোরি ও চর্বিমুক্ত হওয়ায় হৃদরোগীদের জন্য নিরাপদ।

৪) জামরুল আমাদের পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

৫) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ:

রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। জামরুলের বীজ ও পাতা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় ডায়াবেটিসের জন্য।

৬) জামরুল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:

৭) ভিটামিন C-এর আধিক্য শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে মজবুত করে।

৮) হজম শক্তি বাড়ায়:

জামরুল আঁশযুক্ত হওয়ায় হজমে সাহায্য করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

৯) ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা:

এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফেনলিক যৌগ থাকে, যা কোষের ক্ষয় রোধ করে।

১০) ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী:

জমরুলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় আমাদের ত্বক ও চুলে প্রাকৃতিক ঔজ্জ্বল্য আনে।

সতর্কতা:

১) জামরুল অতিরিক্ত খেলে পেট ঠান্ডা বা হালকা পেট ব্যথা হতে পারে।

২) জামরুলে অ্যালার্জি বা ফলভিত্তিক সংবেদনশীলতা থাকলে সতর্ক থাকতে হবে।

৩) জামরুলের বীজ বা মূলভাগ না জেনে ব্যবহার না করাই ভালো, কারণ কিছু ক্ষেত্রে তিক্ততা বা সামান্য বিষাক্ত উপাদান থাকতে পারে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version