কিডনির সমস্যা হলে কি করা উচিৎ?

কিডনির সমস্যা হলে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের (নেফ্রোলজিস্ট) পরামর্শ নেওয়া খুবই জরুরি। সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি এড়ানো সম্ভব।

কিডনির সমস্যার কিছু সাধারণ লক্ষণ যেটা দেখা দিতে পারে, যেমন:

১. শরীরের কোনো অংশ, বিশেষ করে চোখ, মুখ, হাত বা পা ফুলে যাওয়া।

২. প্রস্রাবের পরিমাণে পরিবর্তন আসা (অতিরিক্ত বা কম প্রস্রাব হওয়া)।

৩. প্রস্রাবের রঙে পরিবর্তন আসা, বা প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া।

৪. সবসময় দুর্বল বা ক্লান্ত বোধ করা।

৫. ক্ষুধা কমে যাওয়া এবং বমি বমি ভাব।

৬. উচ্চ রক্তচাপ।

৭.ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া এবং চুলকানি।

৮.পিঠের নিচের দিকে বা কোমরের দুই পাশে ব্যথা।

কি করা উচিত?

১. ডাক্তার দেখানো – নেফ্রোলজিস্ট বা ইউরোলজিস্টের পরামর্শ নিন।

২. পরীক্ষা করানো – ব্লাড টেস্ট (ক্রিয়েটিনিন, ইউরিয়া), ইউরিন টেস্ট, আল্ট্রাসাউন্ড ইত্যাদি করান।

৩. পর্যাপ্ত জল পান – দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন।

৪. লো-সোডিয়াম ডায়েট – লবণ কম খান, প্যাকেটজাত ও ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন।

৫. প্রোটিন নিয়ন্ত্রণ – অতিরিক্ত প্রোটিন (বিশেষ করে লাল মাংস) কম খান।

৬. রক্তচাপ ও শর্করা নিয়ন্ত্রণ – হাই ব্লাড প্রেশার বা ডায়াবেটিস থাকলে নিয়মিত পরীক্ষা ও ওষুধ সেবন করুন।

৭. ওষুধে সতর্কতা – ব্যথানাশক ওষুধ (NSAIDs) বা কিডনির ক্ষতি করতে পারে এমন ওষুধ এড়িয়ে চলুন।

৮. ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন – কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়া এড়াত। ঘরোয়া সতর্কতা

ঘরোয়া সতর্কতা:

১. অতিরিক্ত লবণ এড়িয়ে চলুন – খাবারে লবণ যতটা সম্ভব কম রাখুন।

২. পরিষ্কার জল পান করুন– ফিল্টার বা ফুটানো জল পান করুন।

৩. চিনিযুক্ত পানীয় কমান – সফট ড্রিঙ্কস ও অতিরিক্ত মিষ্টি পানীয় এড়ান।

৪. প্রস্রাব আটকে রাখবেন না – বারবার প্রস্রাব আটকে রাখলে সংক্রমণ ও কিডনির উপর চাপ পড়ে।

৫. অতিরিক্ত ঠান্ডা ও ধুলো এড়িয়ে চলুন – কিডনিতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে।

কিডনি ভালো রাখার জন্য কি খাওয়া উচিত :

১.ফল – আপেল, পেয়ারা, পেঁপে, আঙুর, বেরি জাতীয় ফল।

২. সবজি – লাউ, করলা, পটল, ঢেঁড়স, শসা।

৩. শস্য – ব্রাউন রাইস, ওটস, গমের রুটি।

৪. প্রোটিন – ডাল, সয়াবিন, ডিমের সাদা অংশ (ডাক্তারের নির্দেশ অনুযায়ী পরিমাণ ঠিক রাখুন)।

৫. হার্বাল চা – হালকা গ্রিন টি বা আদা-লেবু চা (চিনি ছাড়া)।

উপসংহার :

কিডনি সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং চিকিৎসক কথা সঠিক ভাবে মেনে চলুন। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জিনিস ও খাবার বর্জন করুন। সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নিলে গুরুতর জটিলতা এড়ানো সম্ভব।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version