কলেরা (Cholera) থেকে রক্ষা পেতে কি করা উচিৎ?
কলেরা (Cholera) একটি বিপজ্জনক জলবাহিত অসুখ। সাধারণত দূষিত জল বা খাবার গ্রহণের মাধ্যমে এটি ছড়ায়। এই রোগে হঠাৎ করেই বমির লক্ষণ দেখা দেয়, ফলে শরীর দ্রুত দুর্বল হয়ে যায়। আর যথাসময়ে চিকিৎসা না করলে রোগীর মৃত্যুর সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
এই রোগ প্রতিরোধ করার জন্য আক্রান্ত ব্যক্তি যা করতে পারেন তা হল :-
১. বিশুদ্ধ জল পান করতে হবে। কলেরা (Cholera) রোধের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল বিশুদ্ধ জল খাওয়া। সবসময় গরম ফুটানো জল অথবা ফিল্টার করা জল পান করা উচিৎ। বাইরের দোকান থেকে বোতলজাত জল কিনলে সিল সঠিকভাবে আছে কিনা তা যাচাই করতে হবে। খোলা স্থানে রাখা জল বা রাস্তার নলের জল ব্যবহার করা যাবে না।
২.টাটকা খাবার খাওয়া খুবই জরুরী। বাসি খাবারের মাধ্যমে কলেরা (Cholera) দ্রুত ছড়াতে পারে। তাই সব সময় গরম এবং সদ্য রান্না করা খাবার খাওয়া উচিৎ। রাস্তার পাশের খোলা বা বাসি খাবার খাওয়া উচিৎ নয়। ফল খাওয়ার আগে ভালো করে ধোয়া দরকার, সম্ভব হলে খোসা ছাড়িয়ে খাওয়া উচিৎ। মাছ, মাংস যদি ভালোভাবে রান্না না করা হয়, তাহলে রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই এগুলো সম্পূর্ণ সেদ্ধ বা রান্না করা উচিৎ।
৩. স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। খোলা স্থানে মল ত্যাগ না করে সবসময় টয়লেট ব্যবহার করতে হবে। ড্রেন এবং নালা পরিষ্কার রাখতে হবে, যাতে নোংরা জল ছড়িয়ে না পড়ে। আবর্জনা ঢেকে রাখা এবং নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা উচিৎ। খাবার ঢেকে রাখা উচিৎ যাতে মাছি বা অন্য কোনো পোকা বসতে না পারে।
৪. চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা প্রয়োজন। ডায়রিয়া বা বমি দেখা দিলে অবহেলা না করে তৎক্ষণাৎ ডাক্তার দেখানো উচিৎ। শিশু এবং বৃদ্ধরা অধিক ঝুঁকিতে থাকে, এজন্য তাঁদের ক্ষেত্রে বিশেষ যত্ন নিতে হবে। হাসপাতালে গিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী স্যালাইন অথবা চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব।
৫. প্রাথমিকভাবে কলেরার টিকা পাওয়া যায়। এই টিকার মাধ্যমে কিছুটা সুরক্ষা নিশ্চিত হয়। টিকার পাশাপাশি নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যাবশ্যক।
কলেরা (Cholera) একটি প্রতিরোধযোগ্য অসুখ। বিশুদ্ধ জল ব্যবহার করলে, সঠিক খাবার গ্রহণ করলে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানলে এই রোগ থেকে সহজেই রক্ষা পাওয়া সম্ভব। যদি প্রতিটি পরিবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, তাহলে কলেরা (Cholera) মহামারী হয়ে উঠবে না। সুতরাং নিজের নিরাপত্তার পাশাপাশি সমাজকে সচেতন করা আমাদের কর্তব্য।
