ফাস্ট ফুড খাওয়ার অপকারিতা

ফাস্ট ফুড খেতে কম বেশি সবারই খুব ভালো লাগে। রাস্তাঘাটে কোথাও ভালো ফাস্টফুডের দোকান দেখতে পেলে মানুষ তার শরীরের খেয়াল ভুলে সেই দোকানের দিকে যায়। এমনও দেখা গেছে, যারা খুবই শরীর সচেতন তারাও মাঝেমধ্যে সেই শরীর সচেতনতা ভুলে গিয়ে ফাস্টফুডের লোভে সেই দিকে ছুটে যায়।

কিন্তু ফাস্টফুড লোভী প্রত্যেকটা ব্যক্তি এটা জানে যে ফাস্টফুড শরীরের পক্ষে কতটা ক্ষতিকারক।

যেসব ব্যক্তিরা ফাস্টফুড প্রতিদিন যাবত গ্রহণ করছে তাদের মধ্যে এক ভয়ানক নেশার সৃষ্টি হয়েছে। ফাস্টফুড বিশেষত তৈরি হয় মানুষের মধ্যে তীব্র খাওয়ার ইচ্ছা এবং অতিরিক্ত ভোজনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। এর ফলে প্রত্যেক মানুষ যারা ক্রমাগত ফাস্টফুড গ্রহণ করছে তাদের ঘরোয়া খাওয়ার ইচ্ছে চলে যায়।

ফাস্টফুডে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি, ফ্যাট এবং সুগার থাকার ফলে যেসব ব্যক্তি নিয়মিত ফাস্টফুড গ্রহণ করছে তাদের অস্বাস্থ্যকর ভাবে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দেয়।

নিয়মিত ফাস্টফুড গ্রহণকারীদের মধ্যে হৃদরোগের সম্ভাবনা বেশি হয়। ফাস্টফুডের মধ্যে পুষ্টিকর উপাদান যেমন ভিটামিন ও খনিজ উপাদান যা মানব দেহে খুবই প্রয়োজনীয় তার পরিমাণ অতিরিক্ত কম থাকে, কিন্তু এই জাতীয় খাবারে ফ্যাট, কোলেস্ট্রল ও সুগারের পরিমাণ অতিমাত্রায় বেশি থাকার কারণে উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের সম্ভাবনা দেখা দেয়।

প্রতিদিন বাইরের খাবার ফলে দেহে হজম শক্তি কমে যায়। ফলে পেটে ব্যাথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্ভাবনা দেখা দেয়।

নিয়মিত বাইরে তৈরি ভেজাল খাওয়ার ফলে ক্যান্সারের সম্ভাবনাও থাকে।

রোজ ফাস্টফুড গ্রহণের ফলে জটিল মানসিক সমস্যাও দেখা যায় যেমন ডিপ্রেশন, ক্ষণে ক্ষণে মুডের পরিবর্তন ইত্যাদি। এর ফলে শরীরে শক্তির অভাব ও দেখা যায়। রোজ ফাস্ট ফুড এবং কোল্ড ড্রিংকস গ্রহণের ফলে দেহে সাময়িক শক্তি তো থাকে কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ পরে গিয়ে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে।

ফাস্টফুড অতিরিক্ত খাবার ফলে মানব দেহে আরো নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায়। যেমন ত্বকের সমস্যা। কোল্ড ড্রিংকস-এ চিনির পরিমান অতিরিক্ত বেশি হওয়ার জন্য ত্বকে তৈলাক্ত ভাব দেখা যায় এবং এর ফলে ব্রণ ও হয়।

ফাস্টফুড জাতীয় খাবারে যেহেতু পুষ্টিকর উপাদানের পরিমাণ একেবারেই নেই তাই এর ফলে চুল পড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে নখ ভেঙে যাওয়া পর্যন্ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

নিয়মিত ফাস্টফুড খাওয়ার ফলে যে শারীরিক ও মানসিক সমস্যাগুলি দেখা যায় সেগুলির চিকিৎসার খরচা অতিরিক্ত বেশি। এবং সাধারণ মানুষের পক্ষে সে খরচা বহন করা সম্ভব হয় না। এবং ঘরোয়া খাবার অথবা পুষ্টিকর খাওয়ার ইচ্ছা না থাকার জন্য নিয়মিত বাইরের ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবারের ওপর নির্ভর করতেও দেখা যায়।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version