হার্নিয়া (Hernia) হওয়ার লক্ষণ ও তার প্রতিকার কি?
হার্নিয়া (Hernia) হল এমন এক স্বাস্থ্য সমস্যা, যা আমাদের শরীরের কোনো অঙ্গ বা অন্ত্রের অংশ বা পেটের অথবা পেশীর দুর্বল কোনো অংশ দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে। এটি সব সময় প্রাণঘাতী না হলেও, চিকিৎসা না করালে গুরুতর জটিলতা তৈরি করতে পারে। চিকিৎসকেরা বলছেন, হার্নিয়া (Hernia) লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত জরুরী।
হার্নিয়ার (Hernia) উপসর্গ
হার্নিয়ার (Hernia) প্রাথমিক পর্যায়ে অনেক সময় হালকা লক্ষণ দেখা যায়, যেগুলো সহজে অবহেলা করা হয়। সাধারণত যে উপসর্গ গুলো বেশি দেখা যায় তা হল।
• পেট বা অণ্ডকোষে ফোলা বা গিঁটের মতো উঁচু অংশ দেখা দেওয়া।
• ভারী জিনিস তোলার সময় ব্যথা বা অস্বস্তি দেখা যায়।
• নিচের পেট ভারী হয়ে যায় বা টানের সৃষ্টি হয়।
• ফোলা অংশে প্রচণ্ড ব্যথার সম্ভাবনা থাকে।
• আবার অনেক সময় বমি বমি ভাব বা মলত্যাগে সমস্যা হতে পারে, অথবা যদি রক্ত চলাচলের সময় সমস্যা দেখা যায় তখন তাকে স্ট্র্যাংগুলেটেড হার্নিয়া বলা হয়।
চিকিৎসা ও প্রতিকার
হার্নিয়া (Hernia) নিজের থেকে সেরে যায় না। চিকিৎসা নেওয়াই একমাত্র উপায়।
• অস্ত্রোপচার (Surgical Operation) সবচেয়ে কার্যকর ও প্রচলিত চিকিৎসা। এতে অঙ্গকে ভেতরে ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং দুর্বল অংশ শক্ত করে সেলাইয়ের সাহায্যে মেরামত করা হয়।
• ওষুধ কেবল ব্যথা উপশমে ব্যবহার করা হয়, কিন্তু হার্নিয়া (Hernia) সারাতে পারে না।
• যদি হার্নিয়া (Hernia) হঠাৎ ফুলে যায়, প্রচণ্ড ব্যথা হয় বা রঙ বদলায়, সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে যাওয়া জরুরী।
প্রতিরোধের উপায়
সব হার্নিয়া (Hernia) প্রতিরোধ করা সম্ভব না হলেও কিছু অভ্যাস ঝুঁকি কমাতে পারে।
• অতিরিক্ত ওজন এড়িয়ে চলা এবং সুস্থ ওজন বজায় রাখা।
• আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া, যাতে কোষ্ঠকাঠিন্য না হয়।
• ভারী জিনিস তুলতে হলে সঠিক ভঙ্গি ব্যবহার করা এবং অযথা চাপ না দেওয়া।
• ধূমপান ছেড়ে দেওয়া, কারণ দীর্ঘদিনের কাশি পেশীকে দুর্বল করে।
• নিয়মিত ব্যায়াম (Exercise) করে পেটের পেশীকে ভালো রাখা সম্ভব, তবে তার জন্য অতিরিক্ত চাপ দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
উপসংহার
হার্নিয়া (Hernia) পুরুষদের এবং মহিলাদের মধ্যে, বয়স্কদের মধ্যে এবং যারা নিয়মিত ভারী কাজ করেন তাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। চিকিৎসকেরা জোর দিয়ে বলছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা নিলে পুরোপুরি সেরে ওঠা সম্ভব। এছাড়াও সচেতনতা এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিলে এই রোগ থেকে সহজেই সুরক্ষার পাওয়া যেতে পারে।
