পেশীকে শক্তিশালী (Muscle Strong) করার জন্য কী করা উচিৎ?

প্রত্যেক মানুষেরই ইচ্ছা থাকে নিজের শরীরকে আরো শক্তিশালী ও সুন্দর বানানোর। শক্তিশালী পেশী (Muscle) শুধুই বাইরের সৌন্দর্য্য বাড়ায় না, বরং আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কাজগুলো আরো অনেক সহজ করে তোলে, যেমন : বাজারের ভারী ব্যাগ বহন করা, সিঁড়ি থেকে ওঠা নামা কিংবা বাইরে খেলাধুলা করা। শক্তিশালী মাসেল হাড়কে রক্ষা করে, শরীরের আকার ঠিক রাখে এবং বয়সের সাথে সাথে শরীর কে দুর্বল করে দেয় না। অনেকে মনে করেন, মাসেল স্ট্রং(Muscle strong) করা শুধুমাত্র জিমে (gym) যাওয়া লোকেদের জন্য।

মাসেল স্ট্রং (muscle strong) করার সবচেয়ে জরুরি উপায় হল ব্যায়াম (exercise)। আমাদের পেশী (muscle) তখনই মজবুত হয় যখন আমরা এটি নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিদিন ব্যায়াম করি। এর মানে এই নয় যে, প্রথম দিনেই অনেক ভারী ব্যায়াম করতে হবে। শুরুতে নিজের শরীরের ওজন ব্যবহার করেই অনেক ব্যায়াম করা যায়, যেমন পুশ-আপ (push up), স্কোয়াট (squats), প্ল্যাঙ্ক (planks) ইত্যাদি। এগুলো কোনো সরঞ্জাম ছাড়াই মাসেল কে সক্রিয় করে তোলে।

যখন শরীর এই ব্যায়ামগুলোর সাথে মানিয়ে নিতে শুরু করবে, তখন ধীরে ধীরে হালকা ডাম্বেল (dumbbell) ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতি সপ্তাহে অল্প করে ওজন বাড়ানোকে বলে প্রগ্রেসিভ ওভারলোড (progressive overload)। এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে মাসেল ধীরে ধীরে আরও শক্তিশালী হবে।

এছাড়াও, কম্পাউন্ড এক্সারসাইজ (compound exercise)-এ জোর দেওয়া প্রয়োজন। যেমন: স্কোয়াট (squats), ডেড লিফট (Dead lift) এবং পুল-আপ (pull-up)। এ ধরনের ব্যায়ামে একসাথে একাধিক মাসেল কাজ করে। উদাহরণস্বরূপ, স্কোয়াট (squats) করলে শুধু পা নয়, কোমর ও পিঠেও জোর পড়ে, ফলে মাসেল শক্ত হয়। এতে কম সময়ে বেশি ফল পাওয়া যায়।

তবে শুধু ব্যায়াম করলেই হবে না, শরীরকে সঠিক খাবারও দিতে হবে। পেশীকে শক্তিশালী (Muscle strong) করার সবচেয়ে দরকারি উপাদান হল প্রোটিন। ডিম, মুরগি, মাছ, দুধ, দই, ডাল, বাদাম কিংবা সয়াবিন এসব খাবার প্রোটিনে ভরপুর। নিয়মিত প্রতিটি খাবারে প্রোটিন রাখার চেষ্টা করুন।

এর পাশাপাশি দরকার কার্বোহাইড্রেট। অনেকে ভুল করে কার্বোহাইড্রেট এড়িয়ে চলেন, কিন্তু এগুলো ব্যায়ামের জন্য শক্তি জোগায়। ভাত, ওটস, আলু, ফল ইত্যাদি কার্বোহাইড্রেটের উৎস।

ভালো ফ্যাট গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো শরীরের হরমোন ঠিক রাখে, যা মাসেল তৈরিতে সাহায্য করে। বাদাম, বীজ, অ্যাভোকাডো আর অলিভ অয়েল এ ক্ষেত্রে ভালো বিকল্প। আর অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেতে হবে।

ব্যায়াম, খাবার আর ঘুমের পাশাপাশি আপনার প্রতিদিনের জীবনধারাও মাসেল প্রভাব ফেলে। নিয়মিত হাঁটা, সিঁড়ি ব্যবহার করা বা মাঝে মাঝে স্ট্রেচ করা প্রয়োজনীয়। ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা ধূমপান এড়িয়ে চলুন, এগুলো শরীরের ক্ষতি করে। এছাড়া, মানসিক চাপ বা স্ট্রেস কমানোও জরুরি। বেশি চাপ নিলে ঘুম খারাপ হয়, ফলে মাসেল সঠিকভাবে তৈরি হতে পারে না।

পেশী (muscle) শক্তিশালী করা মানেই বডি বিল্ডার হওয়া নয়। এটি হল একটি সুস্থ রুটিন তৈরি করা। যেখানে নিয়মিত ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাবার, ভালো ঘুম আর সঠিক অভ্যাস থাকবে। এর ফলে শুধু শরীর নয়, মনও ভালো থাকবে। প্রতিদিন সামান্য একটু করে চেষ্টা করলে সময়ের সাথে বড় পরিবর্তন আসবে। শক্তিশালী মাসেল আপনাকে আত্মবিশ্বাসী, সক্রিয় এবং প্রাণবন্ত করে তুলবে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version