ডিমেনশিয়ার লক্ষণ: স্মৃতির আলো নিভে যাওয়ার আগে সতর্কতার ডাক
ডিমেনশিয়া শুধু একটি চিকিৎসা-শব্দ নয়, বরং এক নীরব ছায়া যা ধীরে ধীরে মানুষের স্মৃতি, চিন্তা আর স্বাভাবিক জীবনকে ঢেকে দেয়। প্রথমে হয়তো মনে হয়, “বয়স হয়েছে, ভুল হচ্ছে” কিন্তু আসলে এটি হতে পারে এক গভীর স্নায়বিক সমস্যার শুরু। এই রোগ মানুষকে ধীরে ধীরে নিজের পরিচয়, স্মৃতি আর বাস্তবতার সাথে সংযোগ হারাতে বাধ্য করে।
ডিমেনশিয়ার লক্ষণ সাধারণত ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়, কিন্তু একবার শুরু হলে তা দ্রুতগতিতে জীবনের উপর প্রভাব ফেলে। কিছু সাধারণ লক্ষণ হল
১. স্মৃতির ক্ষয়:
গতকাল কী খেয়েছেন বা কার সাথে কথা বলেছেন তা মনে না থাকা।
২. মনোযোগ হারানো:
একটি গল্প শোনা বা কাজ করতে গিয়ে বারবার ভুলে যাওয়া।
৩. সময় ও স্থান নিয়ে বিভ্রান্তি:
নিজের বাড়িতেও অচেনা মনে হওয়া বা দিন-তারিখ গুলিয়ে ফেলা।
৪. কথায় জড়তা:
পরিচিত শব্দ ভুলে যাওয়া, বাক্য মাঝপথে থেমে যাওয়া।
৫. দৈনন্দিন কাজে অসুবিধা:
রান্না করতে গিয়ে রেসিপি ভুলে যাওয়া বা চাবি কোথায় রেখেছেন তা না জানা।
৬. আচরণের বদল:
হঠাৎ রাগ, অকারণ সন্দেহ, বা একেবারে নির্লিপ্ত হয়ে যাওয়া।
৭. হারিয়ে যাওয়া:
পরিচিত রাস্তায়ও পথ ভুলে যাওয়া।
৮. সিদ্ধান্তে ভুল:
ছোটখাটো ব্যাপারেও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারা।
প্রিয়জনের মধ্যে এসব লক্ষণ দেখা দিলে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু হয়, তত বেশি সময় ধরে রোগের গতি ধীর করা সম্ভব।
ডিমেনশিয়া শুধু একজন মানুষকে নয়, পুরো পরিবারকে প্রভাবিত করে। এটি স্মৃতির পাতা একে একে মুছে দেয়, আর প্রিয় মুখগুলোও একসময় অচেনা হয়ে যায়। তবে সময়মতো চিকিৎসা, ভালোবাসা, ধৈর্য আর যত্ন এই পথকে কিছুটা হলেও আলোকিত করে তুলতে পারে। কারণ, ডিমেনশিয়ার অন্ধকারে সবচেয়ে উজ্জ্বল আলো হলো প্রিয়জনের স্নেহ আর সমর্থন।
