টক ভাবনা, স্বাস্থ্যকর শক্তি- পলতা পাতা

বৈজ্ঞানিক নাম: Trichosanthes dioica (Tricosanthes dioica)

পলতা গাছের হার্ট-আকৃতির পাতাগুলিকে বাংলায় “পলতা পাতা” বলা হয়। এটি তরলবৃক্ষে জন্মে এবং হালকা ছায়া-হীন, ভাল জল-নিষ্কাশনযুক্ত sandy বা দোআঁশি মাটিতে বৃদ্ধি পায়। গাছটি দিওয়িষয়ী (স্ত্রি ও পুরুষ ফুল পৃথক) এবং ফল ও পাতা উভয়ই প্রচলিতভাবে ব্যবহূত হয়।

খাদ্যসংস্কৃতি ও রান্না:

পলতা পাতা বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী রান্নায় ব্যবহৃত হয়:

১) পলতা পাতার বড়া/পোকোরা:

পাতা ফ্রেশ করে বেসন বা মুগ ডালের ব্যাটারে মিশিয়ে ভাজা হয়। এটির তিক্ততা সামলে খেতে মজাদার হয়।

২) শুক্তো বা মিশ্র শাক:

মিষ্টি-বিষাক্ত মিহি স্বাদের সবজিতে অংশ হিসেবে পাতা যোগ করে রান্না করা হয়, যেমন বগা আলু, কুলেখাড়া, মুলো, বেগুনসহ।

পুষ্টি ও ঔষধি গুণাবলী:

পলতা পাতা প্রচুর পুষ্টি ও ঔষধি বৈশিষ্ট্য ধারণ করে:

১) হজম শক্তি ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণ:

পাতার টনিক ও laxative গুণ রয়েছে যা হজম শাক্‌তি বাড়ায়। এটি hyperacidity, কোষ্ঠ ও ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণেও ব্যবহৃত হয়।

২) জন্ডিস ও লিভার সুস্থতা:

প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, পাতার রস লিভার পরিষ্কার করে ও পিত্ত সংক্রান্ত সমস্যা উপশমে সহায়তা করে ।

৩) রোগ বিরোধী কার্যকরিতা:

আয়ুর্বেদ ও স্থানীয় চিকিৎসা মতে, পাতায় রয়েছে antipyretic (জ্বর কমানো), diuretic (প্রস্রাব বৃদ্ধি), cardiotonic, antiseptic ও blood purifier গুণাবলী। এছাড়া এটি কণিষ্ঠরতার কারণী প্যারাসাইট (ঊর্মি) নির্মূলেও ব্যবহৃত হয়।

৪) নিরাপত্তা বিশেষ ও সতর্কতা:

বর্তমান কোনো গবেষণায় পলতা পাতায় বিষাক্ত উপাদান না পাওয়ায় এটি নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে যেমন কোনো ভেষজ উদ্ভিদ, অতিরিক্ত ব্যবহার বা অজস্র গণিতায় ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত এবং প্রয়োজনে ডাক্তার অথবা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৫) সারাংশ:

পলতা পাতা একটি সৌন্দর্যপূর্ণ, স্বাদময় ও সুস্থতাজনক খাদ্য উপকরণ, যা খাদ্য ও ঔষধ—দুটি ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর ভাজা বড়া বা শুক্তোর মতো রেসিপি সুস্বাদু হলেও স্বাস্থ্য উপকারিতা যেমন হজম শক্তি বৃদ্ধি, liver support ও detoxification ক্ষেত্রেও কার্যকর। তবুও, এর প্রতিদিনের স্বাভাবিক খাদ্যতালিকায় সংযোজনের আগে ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version