বদহজম থেকে অনিদ্রা -হলাসন হয়ে উঠুক আপনাদের প্রতিদিনের থেরাপি

হলাসন:

একটি আসন ,অনেক উপকার-হলাসনের গভীর ছায়া।”

“শরীর উল্টে গেলে মনের ভারসাম্য মেলে- হলাসনের নিরাময় গুণ।”

” পিঠের প্রতিটি অস্থিতে প্রশান্তির ছোঁয়া-হলাসন অনুশীলন।”

” হলাসন মেরুদন্ডের নমনীয়তা ও মনোশক্তির মিলন।”

” শরীর যখন পিছনের দিকে মোড় নেয়,মন তখন সামনের দিকে স্থির হয়ে যায়-এটাই হলাসনের ম্যাজিক।”

” পিঠ বেঁকে থাকলেও শান্তি সোজা হয়ে আসে-হলাসনে গড়ে ওঠে অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য।”

হলাসনের প্রস্তুতিমূলক আসন ও বিশেষ সতর্কতা:

এই আসন করার আগে কিছু প্রস্তুতিমূলক আসন অনুসরণ করা খুবই ভালো। যেমন সেতু বদ্ধাসোনা, বজ্রাসন,

সর্বাঙ্গাসন।

হলাসনের পদ্ধতি :

১) একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ম্যাট ব্যবহার করবেন।

২) হাত দুটি শরীরের পাশে রাখবেন ।

৩) পায়ের পাতা জোড়া করে উপরের দিকে তুলবেন ও মাথার পেছনের দিকে নিয়ে যাবেন।

৪) পা মাটিতে রাখবেন এবং চিবুক বুকের সাথে লেগে থাকবে।

৫) শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখবেন ।

৬) কিছুক্ষণ এই অবস্থায় থাকার পর ধীরে ধীরে আগের অবস্থানে ফিরে আসবেন।

৭) যাদের মেরুদন্ড বা ঘাড়ের সমস্যা আছে তাদের এই আসন করার সময় অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। যোগা প্রশিক্ষক ও ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

৮) যাদের পেটে আঘাত হার্নিয়া উচ্চ রক্তচাপ ঘাড়ের সমস্যা বা চোখের সমস্যা রয়েছে তাদের এই ভঙ্গিটি এড়িয়ে যাওয়া উচিত।

হলাসনের উপকারিতা:

১) শ্বাস প্রশ্বাস উন্নত করে:

হলাসন আমাদের ফুসফুসকে প্রসারিত করে শ্বাস প্রশ্বাস উন্নত করতে সাহায্য করে।

২) হলাসন আমাদের মেরুদণ্ড ও পিঠের পেশী শক্তিশালী করে মেরুদণ্ডকে প্রসারিত করে ও নমনীয়তা বাড়ায় সেই সাথে পিঠের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে তোলে।

৩) রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে:

হলাসন আমাদের শরীরের নিচের অংশ থেকে উপরের অংশে রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে যা আমাদের অঙ্গ ও গ্রন্থি গুলিতে রক্ত প্রবাহ বাড়ায়।

৪) মানসিক চাপ কমায়:

হলাসন আমাদের মনকে শান্ত করতে ও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

৫) হজম শক্তি উন্নত করে:

হলাসন আমাদের পেটের অঙ্গগুলিকে সংকুচিত করে ও হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

৬) থাইরয়েড গ্রন্থিকে সক্রিয় করে:

আমাদের থাইরয়েড গ্রন্থিতে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে,যা বিপাক ও হরমোনের ভারসাম্যকে উন্নত করে।

৭) স্থূলতা কমায়:

হলাসন আমাদের পেটে চর্বি ও ওজন কমাতে সাহায্য করে।

সতর্কতা:

১) এই ভঙ্গিতে বেশি সময় ধরে না থাকা উচিত।

২) ঘাড় এপাশ থেকে অন্য দিকে না নাড়ানো বা পা ওভার হেড থাকা অবস্থায় অন্যদিকে তাকানো উচিত নয়।

৩) যদি আপনারা কেউ উচ্চ রক্তচাপের জন্য ওষুধ খান তাহলে হলাসন করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

অন্যান্য উপকারিতা:

১) হলাসন আমাদের ঘাড় ও কাঁধের টান কমাতে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করতে পারে।

২) এই আসনে সর্দি কাশি,বঙ্কাইটিস ,কানের যন্ত্রণা ,প্রভৃতি উপশম হয়।তাছাড়া ও স্বপ্নদোষ,লো ব্লাড-প্রেসার,মৃগীর ও কানে কম শোনা প্রভৃতিতে এই আসন বিশেষ উপকারী।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version